শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪

‘হিরো আলমকে কেউ জিরো বানাতে পারেনি’

ফাইল ছবি
আপডেটেড
৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ ২৩:৫১
প্রতিনিধি, বগুড়া
প্রকাশিত
প্রতিনিধি, বগুড়া
প্রকাশিত : ৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ ২৩:৪৪

বগুড়া-৪ ও ৬ আসনের উপনির্বাচনের স্বতন্ত্র প্রার্থী হিরো আলমকে নিয়ে শনিবার আওয়ামী লীগ ও বিএনপির কর্মসূচিতে বক্তব্য ও পাল্টা বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে আলোচিত এই কনটেন্ট ক্রিয়েটর বলেছেন, তাকে কেউ কখনো ‘জিরো’ বানাতে পারেনি।

শনিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজ থেকে লাইভে এসে এই প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন হিরো আলম।

তিনি বলেন, ‘হিরো আলমকে কেউ কোনো দিন জিরো বানাতে পারেনি। যারা আমাকে জিরো বানাতে এসেছে, তারাই এখন জিরো হয়েছে।’

লাইভে তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগের নেতা ওবায়দুল কাদের স্যার আজকে হিরো আলমকে নিয়ে কিছু মন্তব্য করেছেন। হিরো আলমকে নাকি বিএনপি ভোটে দাঁড়িয়ে দিয়েছে। আমার কথা, আমাকে কেন বিএনপি ভোটে দাঁড় করিয়ে দিবে। ভোটের মাঠে আমার পাশে কি বিএনপির কাউকে দেখা গিয়েছিল?

বিএনপির নেতা ফখরুল ইসলাম স্যার বলেছেন, ‘বর্তমান সরকার আজকে হিরো আলমের কাছে অসহায়। আমি বলতে চাই, আমি হিরো আলম যে অসহায় এই প্রশ্নের জবাব কে দিবে? আমার ভোট যে কেড়ে নেয়া হলো তার প্রশ্নের জবাব কে দিবে?’

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের মন্তব্য প্রসঙ্গে হিরো আলম বলেন, ‘ওবায়দুল কাদের স্যার আরও একটি কথা বলেছেন, হিরো আলম এখন জিরো হয়েছে। এটা ভুল বলেছেন। হিরো আলমকে কেউ কোনো দিন জিরো বানাতে পারেনি। হিরোকে যারা জিরো বানাতে এসেছে, তারাই এখন জিরো হয়েছে।’

আলোচিত এই ইউটিউবার বলেন, ‘হিরো আলম কারো কান্ধের ওপর ভর দিয়ে এখানে আসেনি। হিরো আলমকে হারানো হয়েছে এটা একটা পরিকল্পনা, চক্রান্ত করে হারানো হয়েছে। হিরো আলমকে পরিকল্পনা করে হারানো হয়েছে। অনেকে বলছেন, পার্লামেন্টকে ছোট করা হবে, হিরো আলম নির্বাচন করলে...। তাহলে পার্লামেন্টে যেতে হলে কিছু আইন করতে হবে। যার যোগ্যতা নেই সে যেতে পারবে না। যার লেখাপড়া নেই সে সংসদে যেতে পারবে না।’

হিরো আলম বলেন, ‘আর একটা বিষয়ে আইন করছেন। যারা ভোট করবে স্বতন্ত্রভাবে তাদের ১ শতাংশ ভোটার তালিকা লাগবে। যদি তাই হয়, তাহলে দলীয়ভাবে যারা করবে তাদের ১ শতাংশ লাগে না কেন? আইন সবার জন্য সমান। তাহলে আইন চেঞ্জ করতে হবে। যারা দলীয়ভাবে বা স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচন করবেন, তাদের সবার ১ শতাংশ ভোটার তালিকা দিতে হবে। না হলে ১ শতাংশ তুলে দিতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘আমি হিরো আলম চ্যালেঞ্জ করছি, সুষ্ঠু নির্বাচন দেন। প্রতি সেন্টারে সিসি ক্যামেরা দেন। বুথে সিসি ক্রামেরা দেন। ইভিএম দিবেন না। কারণ ইভিএম হলো চোর। বাইরের দেশে ইভিএম ডাস্টবিনে ফেলে দিছে। সেটা আমাদের দেশ কুড়িয়ে নিয়ে এসে ভোট করছে। এখানেও কারচুপি হয়। ইভিএমের টিপি মারলে একটায় যায় আরেকটায়।’

লাইভের শেষের দিকে তিনি বলেন, ‘আমি হিরো আলম কোনো দলের সঙ্গে জড়িত না। না বিএনপি, না আওয়ামী লীগ, না অন্য কোনো দল। তাই আপনারা আমাকে নিয়ে কোনো মাখামাখি করবেন না। আপনারা একজন আরেকজনকে দোষ দিবেন না আমাকে নিয়ে।’

গত ১ ফেব্রুয়ারি বগুড়া-৪ (কাহালু-নন্দীগ্রাম) আসনের উপনির্বাচনে মহাজোটের প্রার্থী এ কে এম রেজাউল করিম তানসেনের কাছে মাত্র ৮৩৪ ভোটের ব্যবধানে হেরে যান হিরো আলম। পরে ১০ কেন্দ্রে ফলাফল পাল্টানোর অভিযোগ তোলেন স্বতন্ত্র প্রার্থী হিরো আলম। গণমাধ্যমে এটি দেখার পর সিইসি ফোন করে বিষয়টি খতিয়ে দেখার নির্দেশ দেন।


সনদহীন চিকিৎসকের ‘খোলা চেম্বারে’ অস্ত্রোপচার

বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক পরিচয়ধারী এস এম মারুফ হোসেন।
আপডেটেড ১৭ মে, ২০২৪ ০৩:৩৩
আওয়াল শেখ, খুলনা ব্যুরো

নেই কোনো প্রাতিষ্ঠানিক স্বীকৃতি বা চিকিৎসাসেবা দেওয়ার অনুমতি। তবুও শহরের মধ্যে রয়েছে নিজস্ব চিকিৎসাসেবা কেন্দ্র (চেম্বার)। সেখানে বসে শুধু রোগীদের পরামর্শ দেওয়া নয়, নোংরা পরিবেশে অহরহ অস্ত্রোপচারও করেন। বারবার বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের অভিযানে দণ্ড আরোপ করা হলেও, ১৫ বছরের বেশি সময় ধরে তিনি প্রতারণা করে আসছেন। একাধিক বিষয়ে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক পরিচয়ধারী ওই ব্যক্তি হলেন এস এম মারুফ হোসেন।

খুলনা শহরের জনবহুল এলাকা শান্তিধাম মোড়ের কাছে ইসলামপুর রোডে রয়েছে ডিজিটাল ডায়াগনস্টিক অ্যান্ড কনসালটেশন সেন্টার। ওই ভবনের নিচতলায় ডান পাশের অংশেই মারুফ হোসেনের ব্যক্তিগত চেম্বার। চেম্বারে রয়েছে একটি ছোট শয্যা। তাতে সারি সারি সাজানো অস্ত্রোপচারের সরঞ্জাম।

গ্যারান্টিসহকারে তিনি সেখানে পাইলস ও নাকের পলিপাসের অস্ত্রোপচার করেন। সেই সঙ্গে রোগীদের পরামর্শ দেন মেডিসিন বিশেষজ্ঞ হিসেবে।

তার প্রেসক্রিপশনে নামের আগে লেখা রয়েছে ডা. (ডাক্তার)। বিশেষজ্ঞ হিসেবে লেখা রয়েছে, পাইলস ও নাকের পলিপাস স্পেশালিস্ট (মেডিসিন)। ডিগ্রির তালিকায় রয়েছে ডিএইচএমএস (ঢাকা) ও বিএসএএম (কলকাতা)। যদিও ডিএইচএমএস হলো বাংলাদেশের হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসকদের একটি ডিপ্লোমা ডিগ্রি ও বিএসএএম ডিগ্রির কোনো স্বীকৃতি বাংলাদেশে নেই।

ওই যোগ্যতা নিয়ে নামের আগে ডা. লেখার কোনো বৈধতা নেই বলে জানিয়েছেন খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সহকারী পরিচালক মো. নিয়াজ মুস্তাফি চৌধুরী।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ মেডিকেল ও ডেন্টাল কাউন্সিল (বিএমডিসি) আইন মোতাবেক ন্যূনতম এমবিবিএস অথবা বিডিএস ডিগ্রি প্রাপ্তরা ছাড়া কেউ নামের আগে ডাক্তার পদবি ব্যবহার করতে পারবেন না। এ ছাড়া বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিলের (বিএমডিসি) নিবন্ধন ছাড়া কেউ চিকিৎসাসেবাও দিতে পারবেন না।

রোগীদের সঙ্গে প্রতারণার অভিযোগে গত ২৩ এপ্রিল এস এম মারুফ হোসেনের চেম্বারে অভিযান চালায় জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা। সেখানে তারা খুঁজে পান রোগীকে অজ্ঞান করার ওষুধ লিডোকেইন।

খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অ্যানেসথেশিয়া বিভাগের জুনিয়র কনসালট্যান্ট ডা. শেখ আওরঙ্গজেব প্রিন্স বলেন, শরীরের ছোট ছোট অংশে অস্ত্রোপচারে আগে সংবেদন হারানোর জন্য লিডোকেইন ব্যবহার করা হয়। তবে এর ব্যবহারের একটি নির্দিষ্ট মাত্রা রয়েছে। রোগীর বয়স, ওজন ও মানসিক অবস্থাসহ কয়েকটি বিষয়ের ওপর ভিত্তি করে ওষুধের মাত্রা নির্ধারণ করতে হয়, যা অ্যানেসথেশিয়া বিশেষজ্ঞ ছাড়া কখনই সম্ভব নয়। এর সঠিক প্রয়োগ না হলে রোগীর জীবন ঝুঁকিসহ অন্যান্য জটিলতা দেখা দিতে পারে।

ওই অভিযানটির নেতৃত্ব দিয়েছিলেন ভোক্তা-অধিকারের খুলনা বিভাগীয় কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ সেলিম। তিনি বলেন, চিকিৎসাসেবা দেওয়ার মতো তার কাছে ন্যূনতম কোওনা কাগজপত্র নেই। এমনকি একটি চেম্বার করতে গেলে ট্রেড লাইসেন্স নিতে হয়, সেটিও তার কাছে নেই। তারপরও তিনি অ্যানেসথেশিয়ার মতো জটিল ওষুধ রোগীকে পুশ করতে অস্ত্রোপচার করেন। এসব অপরাধের দায়ে তাকে ভোক্তা-অধিকারের ৪৫ ও ৫১ ধারা অনুযায়ী ৬০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।

তবে ভোক্তা অধিকারের সেই অভিযানের পর তিন দিনের জন্য বন্ধ ছিল ওই চেম্বারটি। পরে আবারও যথারীতি রোগীদের সঙ্গে তিনি প্রতারণা শুরু করেছেন।

তার চেম্বারের কাছেই ৩০ বছরের বেশি সময় ধরে ব্যবসা করছেন মো. তালেব। তিনি বলেন, এই ব্যক্তিকে আগেও দণ্ড দেওয়া হয়েছে। তবে জেল বা জরিমানা দেওয়ার পর কয়েক দিন আড়ালে থেকে আবারও তিনি রোগী দেখা শুরু করেন। এভাবেই তিনি প্রচুর টাকার মালিক।

তার কাছে চিকিৎসা নিয়ে প্রতারিত হয়েছেন এমন একাধিক রোগীর সঙ্গে কথা বলেছেন এই প্রতিবেদক। এর মধ্যে একজন হলেন আলীম উদ্দীন।

তিনি বলেন, ‘আমি পাইলসের চিকিৎসার জন্য তার কাছে গিয়েছিলাম। তখনি তিনি আমাকে অস্ত্রোপচারের পরামর্শ দেন। পরে আমাকে রোগমুক্ত করার গ্যারান্টি দিয়ে অপারেশন করেন। তবে অপারেশনের ৫ দিন পরে আমার মলদ্বার থেকে রক্ত ক্ষরণ শুরু হয়। তখন তার সঙ্গে যোগাযোগ করলে, আমাকে অন্য হাসপাতালে যেতে বলেন। পরে আমি একটি বেসরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গিয়ে পুনরায় চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হই।’

তিনি বলেন, পরবর্তীতে অন্য চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলে জানতে পারি, তিনি আমার পাইলসের অস্ত্রোপচারের জন্য এক ধরনের অ্যাসিড ব্যবহার করেছিলেন। যার কারণে রক্ত ক্ষরণ হয়েছিল।

এ ধরনের চিকিৎসার ফলে রোগীর জীবন বিপন্ন হয়ে যেতে পারে বলে জানিয়েছেন খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সহকারী পরিচালক মো. নিয়াজ মুস্তাফি চৌধুরী। তিনি বলেন, পাইলসের চিকিৎসায় অ্যাসিড ব্যবহার করলে, সেখান থেকে পরবর্তীতে রক্তক্ষরণসহ অন্যান্য রোগ সৃষ্টি হতে পারে। এমন কি ক্যান্সারের মতো জটিল রোগ সৃষ্টি হয়ে রোগীর জীবন বিপন্ন করে দিতে পারে। তাই চিকিৎসা নেওয়ার আগে চিকিৎসকের মান যাচাই করে নেওয়া উচিত।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে চিকিৎসক পরিচয়ধারী এস এম মারুফ হোসেন বলেন, ‘ভাই আমি ডাক্তার হিসেবে খারাপ না। তবে আমার সনদ একটু কম আছে, তাই বারবার জরিমানা দিতে হয়। অভিযানে এসে আমার এই কাগজ নেই, সেই কাগজ নেই বলে বলে দণ্ড আরোপ করে। তবে রোগীরা আমার সেবায় সন্তুষ্ট হয়।’

চিকিৎসাসেবায় এ ধরনের প্রতারণা নির্মূলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ভূমিকা জানতে চাইলে খুলনা বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. মো. মনজুরুল মুরশিদ বলেন, ‘জেলা প্রশাসনের সহায়তায় আমাদের অভিযান চলমান রয়েছে। ভুয়া চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে আরও কঠোর অভিযান শুরু করা হবে।’


নীলফামারীতে অটো চালক হত্যা, গ্রেপ্তার ৩

আপডেটেড ১৬ মে, ২০২৪ ২২:০৯
নাসির উদ্দিন শাহ মিলন, নীলফামারী

নীলফামারীতে ছাপিনুর রহমান (৫০) নামে এক অটো চালকে গলা কেটে হত্যা ও অটো রিক্সা ছিনতাইয়ের ঘটনায় ৩ জনকে গ্রেপ্তার করেছে সদর থানা পুলিশ। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- সদর উপজেলার কুন্দপুকুর ইউনিয়নের মধ্য সুটিপাড়া ফুলতলা এলাকার মজিবুল হকের ছেলে মোঃ রাসেল মিয়া (২২), উত্তর হাড়োয়া পঞ্চপুকুর এলাকার মৃত মজির আলীর ছেলে ফেরদৌস আলম (৩৫) ও নীলফামারী পৌরসভার বাড়াই পাড়া এলাকার আব্দুল মান্নানের ছেলে জলিল ইসলাম ইসলাম ওরফে পিনিক বাবু (৩০)।

আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান পুলিশ সুপার গোলাম সবুর পিপিএম।

পুলিশ সুপার গোলাম সবুর জানান, 'গত ১২ মে রাত ১২টার দিকে ঘাতকরা যাত্রি সেজে ছাপিনুরের অটো রিক্সাতে উঠে জনশূন্য রাস্তায় নিয়ে যায়। এরপর তাকে পৌর শহরের ধনি পাড়া তিস্তা সেচ ক্যানেল এলাকায় নিয়ে গিয়ে পার্শ্ববর্তী ভুট্টা ক্ষেতে গলা কেটে ফেলে দিয়ে অটো রিক্সা ছিনতাই করে নিয়ে যায়। ছাপিনুরের গোঙানির শব্দে স্থানীয় লোকজন টের পেলে তাকে উদ্ধার করে নীলফামারী জেনারেল হাসপাতালে পাঠালে কর্তব্যরত চিকিৎসক রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল স্থানান্তর করলে পথিমধ্যে মৃত্যুবরণ করে ছাপিনুর।'

গোলাম সবুর আরও বলেন, 'এই ঘটনায় তাৎক্ষণিক পুলিশ ঘাতকদের ধরতে তিন থেকে চারটি টিম অভিযান শুরু করে। তারই প্রেক্ষিতে ছিনতাইকৃত অটোসহ ঘাতক রাসেল মিয়াকে ঢেলাপির থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী ফেরদৌস ও জলিলকে গাছবাড়ি এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। আসামিদের নামে হত্যা মামলা দায়ের করে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।'

সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) আমিরুল ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (নীলফামারী সার্কেল) মোস্তফা মঞ্জুর পিপিএম, প্রেসক্লাবের সভাপতি এবিএম মনজুরুল আলম সিয়াম, সদর থানার অফিসার ইনচার্জ তানভীরুল ইসলামসহ বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সংবাদকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।


বাংলাদেশের নির্বাচন ব্যবস্থা বিশ্বে রোল মডেল হবে: ইসি

যশোর জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে বৃহস্পতিবার দ্বিতীয় ও তৃতীয় ধাপের উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের সঙ্গে আচরণবিধি ও অন্যান্য বিষয়ে মতবিনিময়কালে ইসি ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আহসান হাবিব খান। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

নির্বাচন কমিশনার (ইসি) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আহসান হাবিব খান (অব.) বলেছেন, বাংলাদেশের নির্বাচন ব্যবস্থা একসময় বিশ্বে রোল মডেল হবে। প্রথম ধাপের উপজেলা নির্বাচনে সারা দেশে গড়ে ৩৬ শতাংশ ভোটার এসেছে। এটিকে কম বলব না। ধান কাটার মৌসুম, গরম ও ভোটারদের প্রার্থী দেখে পছন্দ হয়নি বলেই ভোটার উপস্থিতি কিছুটা কমেছে। তবে এ অবস্থা উন্নতির দিকে যাচ্ছে।

আজ বৃহস্পতিবার যশোর জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে দ্বিতীয় ও তৃতীয় ধাপের উপজেলা নির্বাচনে যশোর, মাগুরা ও নড়াইল জেলার রিটার্নিং কর্মকর্তা, সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের সঙ্গে আচরণবিধি ও অন্যান্য বিষয়ে মতবিনিময় সভা শেষে প্রেস ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি।

তিনি বলেন, নির্বাচনে কোনো প্রার্থী যদি সন্ত্রাসীকর্মকাণ্ড বা কোনো ঝামেলা করার চেষ্টা করে তাকে ছাড় দেওয়া হবে না। প্রার্থীর বিরুদ্ধে আইনের কঠোর প্রয়োগ করা হবে। একই সঙ্গে কিশোর গ্যাংয়ের পৃষ্ঠপোষকদেরও ছাড় দেওয়া হবে না। এবারের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদরা ভোটারদের কাছে যেতে পারছেন। আর এ যাওয়ার পরিবেশ তৈরি করতে পেরেছে নির্বাচন কমিশন। গত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ এবং উপজেলা পরিষদের প্রথম ধাপের নির্বাচন সুষ্ঠু ও সুন্দর হয়েছে। সামনের নির্বাচনগুলো আরও ভালো হবে।

নির্বাচন কমিশনার বলেন, এই কমিশন সাংবাদিকদের সুরক্ষায় আইন করেছে। নির্বাচনে দায়িত্ব পালন করার সময় কেউ যদি সাংবাদিকদের আহত কিংবা ক্যামেরা ভাঙচুর করে তাহলে তার শাস্তি হবে। তবে, নির্বাচনের সময় কিছু মৌসুমি সাংবাদিক হাজির হয়। তারা কারও পক্ষে, আবার কারও বিপক্ষে প্রচার-অপপ্রচার করে। এ বিষয়টির প্রতিও আমাদের লক্ষ রাখতে হবে।

তিনি নির্বাচন সংশ্লিষ্টদের প্রেসক্লাবের মাধ্যমে যাচাই-বাছাই করে সাংবাদিকদের পাস দেওয়ার নির্দেশনা দেন।

উপজেলা নির্বাচনে এমপিদের ভূমিকার বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে নির্বাচন কমিশনার আহসান হাবিব খান বলেন, এমপিরা কেবল ভোট দিতে পারবেন। তারা কোনো প্রার্থীর পক্ষে প্রচার-প্রচারণা চালাতে পারবেন না।

এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন যশোরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবরাউল হাছান মজুমদার, পুলিশ সুপার প্রলয় কুমার জোয়ারদার, যশোর নির্বাচন কর্মকর্তা আনিছুর রহমান প্রমুখ।

বিষয়:

১৫৭ উপজেলায় জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ

ফাইল ছবি
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপে দেশের ৬৩ জেলার ১৫৭ উপজেলায় জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। আগামী ২১ মে নির্বাচনে অনিয়ম বন্ধে এসব ম্যাজিস্ট্রেট ভোটের আগে-পরে ৫ দিন কাজ করবে।

সম্প্রতি নির্বাচন কমিশনের (ইসি) আইনশাখার উপসচিব আব্দুস সালাম এ সংক্রান্ত চিঠি সংশ্লিষ্টদের পাঠিয়েছেন।

চিঠিতে বলা হয়েছে, ৬৩টি জেলার ১৫৭ উপজেলা পরিষদে চেয়ারম্যান, ভাইস-চেয়ারম্যান এবং মহিলা ভাইস-চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন আগামী ২১ মে অনুষ্ঠিত হবে। সেজন্য ভোটের আগের দুইদিন, ভোটের দিন ও ভোটের পরের দুইদিন অর্থাৎ ১৯-২৩ মে পর্যন্ত ১৫৭ জন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটকে প্রথম শ্রেণির ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

চিঠি সূত্রে আরও জানা গেছে, এসব ম্যাজিস্ট্রেট উপজেলা পরিষদ নির্বাচন বিধিমালা ২০১৩ এর বিধি ৮৪ক- তে প্রদত্ত ক্ষমতাবলে আইন ও বিচার বিভাগ, আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় কর্তৃক বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের সঙ্গে পরামর্শক্রমে নির্বাচনী অপরাধ আমলে নিয়ে সংক্ষিপ্ত পদ্ধতিতে বিচার করবেন। এক্ষেত্রে দায়িত্বপ্রাপ্ত ম্যাজিস্ট্রেটরা দায়িত্ব পালনের সময় ১ জন বেঞ্চ সহকারী, স্টেনোগ্রাফার এবং অফিস সহকারীকে নিজের সহকারী হিসেবে সঙ্গে নিতে পারবেন। একইসঙ্গে ম্যাজিস্ট্রেটের দায়িত্ব পালনের জন্য প্রয়োজনীয় যানবাহন সরবরাহ করতে সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসককেও বলা হয়েছে।

ম্যাজিস্ট্রেটরা সংশ্লিষ্ট নির্বাচনী এলাকায় আদালত পরিচালনার জন্য ২ জন সশস্ত্র পুলিশও পাবেন।

প্রসঙ্গত, ইসি ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী গত ৮ মে প্রথম ধাপের ১৩৯ উপজেলায় ভোটগ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। দ্বিতীয় ধাপের ১৫৭ উপজেলার ভোটগ্রহণ আগামী ২১ মে অনুষ্ঠিত হবে। তৃতীয় ধাপে ১১২ উপজেলায় ২৯ মে ও চতুর্থ ধাপে ৫৫ উপজেলায় ৫ জুন ভোটগ্রহণ হওয়ার কথা রয়েছে।

বিষয়:

নেত্রকোণায় বিল থেকে স্কুল ছাত্রের মরদেহ উদ্ধার

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নেত্রকোণা প্রতিনিধি

নেত্রকোণা পূর্বধলায় আকিব হাসান মাহিন নামে এক স্কুল ছাত্রের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। তিনি পূর্বধলা জগৎমনি পাইলট সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের বিজ্ঞান বিভাগের একজন ছাত্র।

আজ বৃহস্পতিবার সকালে পূর্বধলার থানা পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা মরদেহটি উদ্ধার করেন।

পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, গতকাল বুধবার উপজেলার রাজধলা বিলের উত্তর পশ্চিম কোণে মেহগনি বাগানে বন্ধুদের সঙ্গে ঘুরতে আসে রাজপাড়া গ্রামের ফারুক আহমেদ ওরফে কাশেমের ছেলে আকিব হাসান মাহিন (১৭)। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন উপজেলা শহরের সোহেল রানার ছেলে আবির ও তার বন্ধু সাইমন। বেলা ৫টার দিকে সাইমন এবং আবির দুইজন ঘটনাস্থল থেকে চলে যায়। কিন্তু মাহিন রাত ১০টা পর্যন্ত বাসায় না ফিরলে তার স্বজনরা রাত ভর তাকে খোঁজাখুজি করেন। আজ বৃহস্পতিবার ভোর সাড়ে ৫টার দিকে তার স্বজনরা রাজধলা বিলের উত্তর পশ্চিম কোণে মাহিনের পরিহিত জামা ও ব্যাবহৃত মোবাইল দেখতে পান। স্থানীয় লোকজন এবং তার স্বজনরা অনুমান করেন মহিনের মৃতদেহ বিলে থাকতে পারে। পরে ফায়ার সার্ভিসের একটি ডুবুরি দল ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে মরদেহ উদ্ধার করেন। এ সময় পূর্বধলা থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে নেত্রকোণা জেলার পূর্বধলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাশেদুল ইসলাম দৈনিক বাংলাকে বলেন, ‘সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে নেত্রকোণা জেলা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। পরিবারের অভিযোগের প্রেক্ষিতে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

বিষয়:

সড়ক সংস্কারের কার্পেটিং হাত দিয়ে টেনে তুললেন স্থানীয়রা

ছবি: দৈনিক বাংলা
আপডেটেড ১৬ মে, ২০২৪ ১৪:২৮
খোরশেদ আলম, সোনাইমুড়ী (নোয়াখালী)

সোনাইমুড়ীতে আমকি-থানার হাট সড়ক সংস্কারে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করার অভিযোগ উঠেছে। ফলে সড়ক থেকে কার্পেটিং তুলে ফেলল বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী। জানা যায়, উপজেলার নোয়াখালী-চাটখিল মহাসড়ক থেকে আমকি হয়ে থানার হাট পর্যন্ত সড়কটি দীর্ঘদিন ধরে বেহাল অবস্থায় ছিল। গত বছরের নভেম্বরে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কার্যাদেশ পায়। দুই কিলোমিটার রাস্তাটি ১ কোটি ৫২ লাখ টাকায় টেন্ডারের মাধ্যমে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এম এম ট্রের্ডাস সংস্কারের কাজ পায়।

শুরুতেই নিম্নমানের ইট, বালি দিয়ে কাজ শুরু করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। সড়কে নিম্নমানের সামগ্রী দেওয়ায় শুরু থেকেই এলাকাবাসী প্রতিবাদ করে আসছে। কয়েকবার সড়কের কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়; কিন্তু ঠিকাদার ও উপজেলা প্রকৌশল অফিসের অসাধু কর্মকর্তার যোগসাজশে নির্মাণ কাজ চালিয়ে যায়। গতকাল বুধবার সকালে এলাকাবাসী ক্ষিপ্ত হয়ে সড়কের ঢালাইয়ের কিছু অংশের কার্পেটিং হাত দিয়ে টেনে টেনে তুলে ফেলে। সেই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার হলে এলাকায় তোলপাড় সৃষ্টি হয়।

স্থানীয় মাহতলা গ্রামের বাসিন্দা আনোয়ার হোসেন অভিযোগ করে জানান, শুরুতেই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের লোকজন দলীয় প্রভাব খাটিয়ে নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে সড়কের কাজ শুরু করে। কয়েকবার বাধা দেওয়ার পরেও তারা শোনেনি। ন্যূনতম বিটুমিন ও পাথর দিয়ে ঢালাই দেওয়ায় তা এলাকাবাসী হাত দিয়ে টেনে তুলে ফেলেন। পরে স্থানীয়রা সড়কের কাজ বন্ধ করে দেয়। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এম এম ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী রনি জানান, সিডিউল অনুযায়ী সড়কের কাজ হচ্ছে, তবে এলাকার লোকজন কয়েকবার বাধা দিয়েছে। আজকেও বাধা দেওয়ার পর সড়কের কাজ বন্ধ আছে।

উপজেলা প্রকৌশলী এমদাদুল হকের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জানতে পেরেছি, সড়কের কার্পেটিং হাত দিয়ে টেনে তুলেছে এলাকাবাসী। এ ঘটনায় ঠিকাদারের লোকজন নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দেয়। তবে সিডিউল অনুযায়ী ও তাদের সার্বক্ষণিক তত্ত্বাবধায়নে সড়কের কাজ চলছে। জেলার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্টরা গতকাল সরেজমিনে পরিদর্শন করে সড়কের নির্মাণকাজে সন্তোষ প্রকাশ করেন।’


কুমিল্লায় ট্রেনে কাটা পড়ে শিক্ষার্থীর মৃত্যু

ছবি: দৈনিক বাংলা
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
কুমিল্লা প্রতিনিধি

কুমিল্লা আদর্শ সদর উপজেলার রসুলপুর রেল স্টেশনের কাছে মাজারের সামনে ট্রেনে কাটা পড়ে এক শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা ২০ মিনিটের দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত শিক্ষার্থী রসুলপুর গ্রামের রসুলপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণীর ছাত্রী মিম আক্তার।

ঘটনার পর থেকে রেললাইনে অবস্থান করে ওই স্কুলের শিক্ষার্থী ও স্থানীয়রা। এর ফলে রসুলপুর স্টেশনে আটকে পড়ে ঢাকাগামী মহানগর প্রভাতী ট্রেন। পরে পুলিশ ও স্থানীয় চেয়ারম্যানের আশ্বাসে অবরোধ তুলে নেন তারা।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, স্কুলে যাওয়ার সময় মাজার গেট দিয়ে রেল লাইন পার হচ্ছিল শিক্ষার্থী মিম। ঢাকাগামী চট্রলা এক্সপ্রেস ও চট্টগ্রামগামী পর্যটন এক্সপ্রেস একসঙ্গে ক্রস করছিল। ওই শিক্ষার্থী একপাশের ট্রেন দেখলেও অপরপাশের ট্রেন না দেখায় কাটা পড়ে ঘটনাস্থলেই মারা যায়। ঘটনার পর থেকে অবরোধ শুরু করে শিক্ষার্থীরা।

স্থানীয়রা আরও জানান, এই রেলক্রসিংটি দীর্ঘদিন ধরে এভাবে অরক্ষিত অবস্থায় রয়েছে।

কুমিল্লা রেলওয়ে স্টেশন পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মোস্তফা কামাল দৈনিক বাংলাকে বলেন, ‘দুর্ঘটনার পর পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। ওই শিক্ষার্থীরা কেন রেললাইন অবরোধ করেছে তা জানিনা। তাদের সঙ্গে কথা বলছি আমরা। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।’

বিষয়:

ফতুল্লায় ছাদ থেকে পড়ে নির্মাণ শ্রমিকের মৃত্যু

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি

নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় নির্মাণাধীন একটি ভবনের তৃতীয় তলার ছাদ থেকে পড়ে মো. ইসমাইল (৫৫) নামে এক নির্মাণ শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় ফতুল্লার দাপা ইদ্রাকপুরের শারজাহান রোলিং মিলস খাঁ বাড়ী এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

নিহত শ্রমিক মো. ইসমাইল নোয়াখালী জেলার বেগমগঞ্জ থানার রফিকপুরের মুসলিম মিয়ার ছেলে ও শিয়াচর সামাদ মিয়ার বাড়ীর নিচতলার ভাড়াটিয়া।

স্থানীয়রা জানান, দুপুরে ভবনে কাজ করার সময় অসাবধনতায় তিনি ভবনের তৃতীয় তলার ছাদ থেকে পড়ে যান। সে সময় অন্য শ্রমিকরা তাকে উদ্ধার করে দ্রুত খানপুর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করে ফতুল্লা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নূরে আজম মিয়া দৈনিক বাংলাকে বলেন, ‘ভবন থেকে পড়ে ওই শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। এ বিষয়ে এখনো কেউ লিখিত অভিযোগ দেয়নি। কেউ অভিযোগ দিলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’


দেশের ৫ বিভাগে হিট অ্যালার্ট জারি

প্রতীকী ছবি
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

দেশের রাজশাহী, রংপুর, ঢাকা, খুলনা ও বরিশাল বিভাগের জন্য হিট অ্যালার্ট জারি করেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। গতকাল বুধবার এক বিজ্ঞপ্তিতে এই সতর্কবার্তা জারি করা হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, রাজশাহী, রংপুর, ঢাকা, খুলনা ও বরিশাল বিভাগের ওপর দিয়ে চলমান তাপপ্রবাহ গতকাল সন্ধ্যা ৬টা থেকে পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টা অব্যাহত থাকতে পারে। এ সময় জলীয়বাষ্পের আধিক্যের কারণে অস্বস্তি বাড়তে পারে। এর আগে এপ্রিলে তীব্র তাপপ্রবাহের কারণে বেশ কয়েকবার হিট অ্যালার্ট জারি করা হয়েছিল।

এ দিকে গতকাল সন্ধ্যা ৬টা থেকে পরবর্তী ৭২ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, পাবনা, দিনাজপুর, নীলফামারী, কুড়িগ্রাম এবং রাঙামাটি জেলাসমূহের ওপর দিয়ে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। চট্টগ্রাম, কুমিল্লা, চাঁদপুর, নোয়াখালী, ফেনী এবং বান্দরবান জেলাসহ ঢাকা, ময়মনসিংহ, খুলনা, বরিশাল ও সিলেট বিভাগ এবং রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের অন্যান্য অঞ্চলের উপর দিয়ে মৃদু তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে।


ফরিদপুরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আগুন

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১৬ মে, ২০২৪ ১০:৫৩
নিজস্ব প্রতিবেদক

ফরিদপুরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। আজ বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে হাসপাতালের দ্বিতীয় তলার স্টোর রুমে এ আগুনের সূত্রপাত হয়।

স্থানীয় ও হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, হাসপাতালটির দ্বিতীয় তলার স্টোর রুম থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়। এ সময় আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে এবং ধোঁয়ায় আশপাশ অন্ধকার হয়ে যায়। আগুন নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসের কয়েকটি টিম কাজ করেছে।

ফরিদপুর ফায়ার সার্ভিসের সহকারী পরিচালক মো. আসাদুজ্জামান বলেন, ‘খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে ২০ মিনিটের মধ্যে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। তবে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ প্রাথমিকভাবে নির্ধারণ করা যায়নি। পরবর্তীতে জানানো যাবে।’

ফরিদপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপ-পরিচালক দীপক কুমার বলেন, ‘হঠাৎ করে হাসপাতালটির দ্বিতীয় তলার স্টোর রুমে আগুন লাগে। পরে তা দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে এবং ধোঁয়ায় অন্ধকার সৃষ্টি হয়। স্টোর রুমটিতে হাসপাতালের ওষুধপত্র, যন্ত্রপাতি, ফ্রিজসহ নানা সরঞ্জাম রয়েছে।


অসহায় নারীদের টাকা নিয়ে উধাও ‘কৃষি ফাউন্ডেশন’

ছবি: দৈনিক বাংলা
আপডেটেড ১৬ মে, ২০২৪ ১০:২৮
এফ এম কামাল হোসেন, কাপাসিয়া (গাজীপুর)

কথা ছিল নারীদের আত্মকর্মসংস্থান সৃষ্টির জন্য হাঁস-মুরগি ও গবাদিপশু কিনতে ঋণ দেওয়া হবে। সে জন্য ঋণের বিপরীতে সঞ্চয় হিসাবে অগ্রিম টাকাও নেওয়া হয়। কিন্তু নির্দিষ্ট দিনে ঋণ দেওয়ার কথা থাকলেও ঋণদানকারী এনজিও অফিসে গিয়ে সবাই বোকা বনে গেলেন। অফিসে আসবাবপত্র ছাড়া কিছুই নেই, কর্মকর্তা-কর্মচারীরা পালিয়ে গেছেন। বন্ধ রেখেছেন তাদের নিজেদের মোবাইল ফোন।

ঋণ দেওয়ার নামে এমন অভিনব প্রতারণার ঘটনা ঘটেছে গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলার দুর্গাপুর ইউনিয়নের গোসাইরহাট গ্রামে। প্রতারক ওই এনজিওর নাম ‘কৃষি ফাউন্ডেশন’। গত রোববার এমন প্রতারণার শিকার হয়েছেন ওই গ্রামসহ আশপাশের আরও কয়েকটি গ্রামের দুই শতাধিক নারী।

ক্ষতিগ্রস্ত নারীরা জানিয়েছেন, সব মিলিয়ে কৃষি ফাউন্ডেশনের কাছে তারা জমা দিয়েছিলেন ৭০ লাখের বেশি টাকা।

রানীগঞ্জ বাজারের পাশে একটি বাড়ি ভাড়া নিয়ে ‘কৃষি ফাউন্ডেশন’ নামে এনজিওটি গত ১৫ দিন ধরে চলছিল। ঋণের বিপরীতে দৈনিক ভিত্তিতে সঞ্চয় জমা নেওয়া হতো। এ জন্য ব্যবহার করা হচ্ছিল জনপ্রতি একটি করে পাস বই। ওই বইয়ের ওপরের দিকে এনজিওটির নিবন্ধন নম্বর হিসেবে লেখা আছে, গভঃ রেজিস্ট্রেশন নং ম-৬২০/১৯৯২। ঠিকানা হিসেবে লেখা আছে, ১১৮/৫, মতিঝিল বাণিজ্যিক এলাকা, ঢাকা-১০০০।

তবে কাপাসিয়া উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মো. রুহুল আমিন জানান, কাপাসিয়া উপজেলা সমাজসেবা অধিদপ্তর থেকে এই নামে কোনো এনজিও নিবন্ধন নেয়নি।

কৃষি অধিদপ্তর থেকেও এ ধরনের এনজিও নিবন্ধনের অনুমোদন নেয়নি বলে জানান কাপাসিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সুমন কুমার বসাক।

গ্রামের নারীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এই মাসের শুরু থেকে বাড়িগাঁও, রানীগঞ্জ ও গোসাইরহাট গ্রামে ঘুরে ঘুরে সমিতির কার্যক্রম প্রচার করেন কৃষি ফাউন্ডেশনের লোকজন। তারা জানান, প্রতি ১০ হাজার টাকা সঞ্চয়ের বিপরীতে নারীদের আত্মকর্মসংস্থানের জন্য এক লাখ টাকা করে ঋণ দেওয়া হবে। এই টাকায় নারীরা গবাদিপশু কিনে লালনপালন করবেন। পরে সাপ্তাহিক, মাসিক কিংবা ষান্মাসিক ভিত্তিতে ৭ শতাংশ সুদসহ পর্যায়ক্রমে ঋণ পরিশোধ করবেন। তারা একেক জনকে সর্বোচ্চ ৫ লাখ টাকা ঋণ দেবেন বলে প্রচার করেন। এজন্য গ্রামে গ্রামে ছোট ছোট ইউনিট গঠন করা হয়। তাদের কার্যক্রম দেখে ঋণ নিতে আগ্রহী হন নারীরা। পাস বইয়ে দৈনিক ও সাপ্তাহিক ভিত্তিতে ঋণের জন্য সঞ্চয় জমা করতে থাকেন তারা। খুব দ্রুত ঋণ পেতে বেশির ভাগ নারী সদস্য এককালীন ১০ থেকে শুরু করে ৫০ হাজার টাকা সঞ্চয় হিসেবে জমা দিয়েছেন। গ্রামের নারীরা জানিয়েছেন, সঞ্চয়ের টাকা জমা নিয়ে পালিয়ে যাওয়ায় তারা এখন আত্মকর্মসংস্থানের পরিবর্তে উল্টো অসহায় হয়ে পড়লেন।

চটকদার প্রচারে ঋণের ফাঁদে পড়ে ক্ষতিগ্রস্ত নারী রহিমা খাতুন বলেন, ১ লাখ টাকা ঋণ নেওয়ার জন্য তিনি ১০ হাজার টাকা সঞ্চয় জমা দিয়েছিলেন। এখন ওই টাকা হারিয়ে তিনি বিপাকে পড়ে গেছেন। মাহমুদা খাতুন নামে অপর নারী জানিয়েছেন, তিনি দুই দফায় দশ হাজার টাকা জমা করেছিলেন। তার পাস বইয়ে টাকা জমার তথ্য লেখা আছে।

তাসলিমা বেগম নামের এক গ্রাহক বলেন, তাকে ৫ লাখ টাকা সহজ শর্তে ঋণ দেওয়ার প্রস্তাব করেছিলেন কৃষি ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তারা। এ জন্য তিনি তিন দফায় মোট ৫০ হাজার টাকা ও আনুষঙ্গিক আরও পাঁচ হাজার টাকা জমা করেন। কিন্তু ১২ মে সকালে ঋণ নিতে এসে হতাশ হয়ে গেছেন তিনি। ঋণদানকারী এনজিও অফিসে এসে কাউকে পাননি তারা।

নূপুর নামে আরেক গ্রাহক জানান, তিনি ও তার মা মিলে মোট ৩০ হাজার টাকা সঞ্চয় হিসেবে কৃষি ফাউন্ডেশনের কাছে জমা রেখেছিলেন। এখন ঋণ পাওয়া তো দূরের কথা, সঞ্চয়ের টাকার হদিস নেই। নূপুর বলেন, ‘আমরা এলাকার সাধারণ মানুষ। এনজিওর ভালো-মন্দ বুঝতে পারিনি। এখন আমাদের এই টাকার কি হবে।’

কৃষি ফাউন্ডেশন নামে ঋণদানকারী ওই এনজিও যে বাড়িটি ভাড়া নিয়েছিলেন, সেটির মালিক মো. তাজউদ্দিন। মঙ্গলবার সরেজমিনে অফিসে গিয়ে তাকে পাওয়া যায়নি। একাধিকবার ফোন দিয়েও তার সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

কৃষি ফাউন্ডেশনের একজন কর্মকর্তার মোবাইল নম্বর সংগ্রহ করে বারবার কল দিলেও সেটি বন্ধ পাওয়া যায়। তাই তাদের বক্তব্য নেওয়া যায়নি।

দুর্গাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এম এ ওয়াহাব খান খোকা বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে কোনো এলাকায় যদি কোনো এনজিও চালু করতে হয়, তাহলে সেই এলাকার ইউনিয়ন পরিষদ থেকে অনুমোদন নিতে হয়। আমি এই নামে কোনো এনজিওকে অনুমোদন দেইনি। ভুক্তভোগীদের আইনি সহায়তা পেতে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করা হবে।’

কাপাসিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এ কে এম লুৎফর রহমান বলেন, কৃষি ফাউন্ডেশন নামের এনজিওর বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য স্থানীয় চেয়ারম্যানকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ভুক্তভোগীদের একটি তালিকা তৈরি করে থানায় অভিযোগ দিতে বলা হয়েছে।


গাজীপুরে পুড়ে ছাই অর্ধশতাধিক বসতঘর-দোকানপাট

গতকাল রাত আড়াইটার দিকে গাজীপুরের ভোগড়া এলাকায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

গাজীপুরের ভোগড়া এলাকায় অগ্নিকাণ্ডে তিনটি কলোনির শতাধিক বসতঘর, দোকান ও মালামাল ভস্মীভূত হয়েছে। গতকাল বুধবার মধ্যরাতের পর এ অগ্নিকাণ্ড ঘটে।

গাজীপুর ফায়ার সার্ভিসের সহকারী উপপরিচালক আব্দুল্লাহ আল আরিফিন জানান, বুধবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে ৯৯৯ থেকে অগ্নিকাণ্ডের খবর পান তারা। পরে ভোগড়া মডার্ন ফায়ার স্টেশনের তিনটি ও কোনাবাড়ী মডার্ন ফায়ার স্টেশনের দুটি ইউনিটের কর্মীরা ঘটনাস্থলে গিয়ে প্রায় এক ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন।

বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। অগ্নিকাণ্ডে তিনটি কলোনির অর্ধশতাধিক বসতঘর ও দোকানপাট পুড়ে গেলেও কেউ হতাহত হননি।

একজন কলোনির মালিক আব্দুর রহমান জানান, তার ৭০টির মতো বসতঘর ও টিভি ফ্রিজসহ বিভিন্ন মালামাল পুড়ে গেছে। বুধবার দিনগত রাত আড়াইটার দিকে আগুনের সূত্রপাত হলেও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থলে গেছে দেরি করে, যার কারণে দ্রুত আগুন ছড়িয়ে গেছে।

কলোনির এক বাসীন্দা জানান, মোহর আলীর ভাড়া দেওয়া হোটেল ও চায়ের দোকান থেকে এই অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত হয়। পরে তা দ্রুত নিয়ন্ত্রণহীন হয়ে আশপাশের কলোনিতে ছড়িয়ে পড়ে। নিজেরা আগুন নেভানোর চেষ্টা চালিয়ে ৯৯৯ নম্বরে জানানো হয়। কিন্তু ঘটনাস্থলে ফায়ার সার্ভিসের লোকজন আসতে দেরি করেছে।

ঘটনাস্থলে দেরিতে যাওয়ার কথা অস্বীকার করে ভোগড়া মডার্ন ফায়ার স্টেশনের সিনিয়র স্টেশন অফিসার মো. রুহুল আমিন জানান, এলাকায় পানি সংকটের কারণে আগুন নেভাতে কিছুটা বিলম্ব হয়েছে।

বিষয়:

উখিয়ায় আরসার আস্তানা: অস্ত্র, গ্রেনেড ও রকেট সেলসহ আটক ২

গ্রেপ্তার হওয়া সলিম ও তার সহযোগি মো. রিয়াজ। ছবি: দৈনিক বাংলা
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
কক্সবাজার প্রতিনিধি

কক্সবাজারের উখিয়ায় রোহিঙ্গা ক্যাম্প সংলগ্ন গহীন পাহাড়ে রোহিঙ্গাদের সন্ত্রাসী গোষ্ঠি আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মির (আরসা) আস্তানার সন্ধান পেয়েছে র‌্যাব। যেখানে টানা ৬ ঘন্টার অভিযানে অস্ত্র, গ্রেনেড ও রকেট সেলসহ দুই সন্ত্রাসীকে আটক করেছে র‌্যাব।

বুধবার ভোর ৫টা থেকে উখিয়া উপজেলার কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্প সংলগ্ন গহীন লাল পাহাড়ে এ অভিযান চালানো হয় বলে জানান র‌্যাব সদর দপ্তরের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার মোহাম্মদ আরাফাত ইসলাম।

অভিযানে উদ্ধার করা হয়েছে ৫টি রকেল সেল, ৩টি রাইফেল গ্রেনেড, ১০টি দেশীয় তৈরি হ্যান্ড গ্রেনেড, ১৩টি ককটেল, ১টি বিদেশি রিভলবার, ৯ রাউন্ড পিস্তলের এ্যামুনিশন, ১টি এলজি এবং ৩টি ১২ বোর কার্তুজ।

অভিযানে আটক করা হয়েছে, আরসার অন্যতম প্রধান সমন্বয়ক ও কমান্ডার ১৫ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের সৈয়দুল আবেরার ছেলে মো. শাহনুর প্রকাশ মাস্টার সলিম (৩৮) ও সলিমের অন্যতম সহযোগি ৮ নম্বর ক্যাম্পের মৃত মোহাম্মদ নুরের ছেলে মো. রিয়াজ (২৭)।

অভিযান শেষে বেলা ১২ টায় ঘটনাস্থলে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাব সদর দপ্তরের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার মোহাম্মদ আরাফাত ইসলাম জানান, সম্প্রতি ঘটে যাওয়া হত্যাকান্ড এবং বিভিন্ন সন্ত্রাসী ঘটনার প্রেক্ষিতে র‌্যাব-১৫ গোয়েন্দা তৎপরতা ও নজরদারি শুরু করে। যার সূত্র ধরেই জানা যায় মাস্টার সলিম বর্তমানে বাংলাদেশের আরসার প্রধান হিসেবে নেতৃত্ব দিচ্ছে এবং তার নেতৃত্বে পুনরায় হত্যাসহ বিভিন্ন অপরাধ কর্মকান্ড পরিচালনা ও পার্শ্ববর্তী দেশ থেকে অস্ত্র-গোলাবারুদ সংগ্রহ করে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে নাশকতার সৃষ্টির চেষ্টা চলছে। গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ভোরে উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্প সংলগ্ন লাল পাহাড়ে আরসার আস্তানায় অভিযান পরিচালনা করে র‌্যাব। এসময় দুইজন আরসা সন্ত্রাসী আটক করতে সক্ষম হয়। তাদের কাছ থেকে অস্ত্র, গ্রেনেড ও রকেট সেল উদ্ধার করা হয়েছে।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের সূত্র ধরে কমান্ডার মোহাম্মদ আরাফাত ইসলাম জানান, শাহনুর প্রকাশ মাস্টার সলিম ২০১৭ সালে বাংলাদেশে প্রবেশ করে এবং ১৫ নম্বর ক্যাম্পে বসবাস শুরু করে। সে মিয়ানমারে থাকাকালিন সেখানকার আরসা জোন কমান্ডারের দায়িত্বে নিয়োজিত ছিল। এছাড়াও আরসা প্রধান আতাউল্লাহ আবু আম্মার জুনুনির দেহরক্ষী হিসেবে দুই মাস দায়িত্ব পালন করে। বাংলাদেশে রোহিঙ্গা শরণার্থী হিসেবে ২০১৭ সালে আসার পর মৌলভী আকিজের মাধ্যমে আরসায় পুনরায় যোগদান করে। আরসার হয়ে আধিপত্য বিস্তার কোন্দলসহ খুন, অপহরণ, চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন অপরাধের সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়ে পড়ে। অস্ত্র চালনাসহ বিভিন্ন বিস্ফোরকের উপর পারদর্শী সে। তার বিরুদ্ধে ৩টি হত্যা মামলাসহ অন্যান্য বিভিন্ন অপরাধে একাধিক মামলা রয়েছে। আর রিয়াজ তার সহযোগি। এ ব্যাপারে মামলা করে আটককে উখিয়া থানায় সোপর্দ করার প্রক্রিয়া চলছে বলে জানান তিনি।

তিনি আরও জানান, রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আধিপত্য বিস্তারসহ বিভিন্ন কারণে সন্ত্রাসী গোষ্ঠী কর্তৃক ২০২৩ সালে ৬৪ জন এবং ২০২৪ সালে এ পর্যন্ত ১৬ জন নির্মমভাবে হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছে। এ সকল সন্ত্রাসী কার্যক্রম নির্মূলে র‌্যাব শুরু থেকেই বিশেষ গোয়েন্দা তৎপরতা ও নজরদারি চালু রেখেছে। যার প্রেক্ষিতে ১১০ জন আরসা সন্ত্রাসীকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়। তাদের নিকট থেকে ৫১.৭১ কেজি বিস্ফোরক, ১২টি বিদেশি আগ্নেয়াস্ত্র, ৫৩টি দেশিয় আগ্নেয়াস্ত্র, ১৫৩ রাউন্ড গুলি/কার্তুজ, ৬৭ রাউন্ড খালি খোসা, ৪টি আইডি ও ৩৫টি ককটেল উদ্ধার করা হয়। এ অভিযান অব্যাহত রাখা হবে বলেও জানান তিনি।

ঘটনাস্থলে সেনাবাহিনীর বোমা নিষ্ক্রিয়করণ দল যায়। দলটি অভিযানে উদ্ধার হওয়া বিস্ফোরক, গ্রেনেড, আইইডি এবং রকেট সেল নিষ্ক্রিয়করণ করে।


banner close